1. »
  2. রাজনীতি

পুলিশের লাঠি দিয়ে জনগণকে দমিয়ে রাখতে পারবেন না : গয়েশ্বর

মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২৪ ০৫:০৬ পিএম | আপডেট: মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২৪ ০৫:০৬ পিএম

পুলিশের লাঠি দিয়ে জনগণকে দমিয়ে রাখতে পারবেন না : গয়েশ্বর

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সরকার নাকি সংসদে বসবে। ভালো কথা বসেন। তবে আপনাদের কাজ আপনারা করেন। আমাদেরটা আমাদের করতে দেন। আজকে কোথাও আমাদের কালো পতাকা মিছিল করতে দেননি। দেশের মানুষ কিন্তু ভালোর ভালো, খারাপের খারাপ। সুতরাং মানুষের প্রতিবাদের ভাষা বুঝেন। পুলিশের লাঠি দিয়ে জনগণকে বেশিদিন দমিয়ে রাখতে পারবেন না। আমরা শান্তিপ্রিয় মায়ের শান্ত ছেলে কভু শত্রু এলে অস্ত্র হাতে লড়তে জানি। ৭১ সালে তার প্রমাণ দিয়েছি।

তিনি বলেন, দেশের জনগণ তো এই সরকারের বিরুদ্ধে লাল পতাকা ও কালো পতাকা প্রদর্শন করছে। তারা কিন্তু এই সরকারের পক্ষে কিছু বলছে না।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দী পেশাজীবী ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ডামি সংসদ বাতিল এবং এক দফা দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

বিএসপিপির আহ্বায়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, প্রকৌশলীদের সংগঠন এ্যাবের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিজু, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, ডিইউজের সভাপতি মো: শহীদুল ইসলাম, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম, সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম, নার্সেস এসোসিয়েশনের জাহানারা সিদ্দিকা প্রমুখ।

মানববন্ধনে পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে অংশগ্রহণ করেন ডা. রফিকুল কবির লাবু, ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, প্রকৌশলী কেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু, ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, অধ্যক্ষ সেলিম মিয়া, সাঈদ খান, তরিকুল ইসলাম তারিক প্রমুখ।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার শুধু একা নয়, কিছু দেশ, প্রজাতন্ত্রের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে একটা সিন্ডিকেট দেশের ১৮ কোটি মানুষের ক্ষমতা হরণ করেছে। এই সরকারকে বলা যায় কর্তৃত্ববাদী। এই সরকারের ভাষা কখনো জনগণের জন্য হয় না। তাদের মায়া-মমতা থাকে না। তাদের লক্ষ্য থাকে দেশের অর্থনীতি লুটপাট করা। তাদের সাথে পার্টনার থাকে পুলিশ প্রশাসন। আজকে সরকার তার প্রশাসনের লোকজনেরও দুর্নীতিবাজ বানিয়েছে। তারা কেউ দুর্নীতি না করলে চাকরি যায়।

তিনি বলেন, আজকে উন্নয়নের অপর নাম দুর্নীতি। তারা উন্নয়ন না করে বিদেশে টাকা পাচার করে। দেশে কোনো কর্মসংস্থান নেই। বেকারত্ব বাড়ছে। এভাবে বেকারত্ব বাড়লে তরুণদের ক্ষুধাও কিন্তু বাড়ে। এই সরকারকে সরাতে আমাদের লড়াই চলছে এবং চলবে। হয়তো কৌশল ভিন্ন হয়। বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করে যাচ্ছে এবং করবে। আমরা তো ১৭৩ দিন হরতাল এবং বাসে গানপাউডার দিয়ে মানুষ হত্যা, লগি বৈঠা দিয়ে মানুষকে হত্যা করে নাচগান করার রেকর্ড করতে পারিনি। এই ঐতিহ্যতো তাদের মানায় যাদের ডান হাত আর বাম হাত একই।

গয়েশ্বর বলেন, আজকে দেশে দ্রব্যমূল্যের কী অবস্থা? জিনিস-পত্রের দাম বেড়েছে। কিন্তু সরকারের চায় কেবল ক্ষমতা। টাকা পাচার বেড়েছে। তাহলে এসবের জবাব দিবে কে?

তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি দেশের ৭ শতাংশ লোক সরকারকে নাকি ভোট দিয়েছে। তাহলে দেশের ৯৩ শতাংশ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে। তাদেরকে চান না। তাছাড়া ওই ৭ শতাংশ লোক হলো সরকারের সুবিধা ভোগী। যাদেরকে কার্ড দিয়ে আবার তার জব্দ রেখেছে।

তিনি বলেন, আজকে টাকার ও ক্ষমতার লোভে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে জামিন দেননি। তারা নাকি প্রাধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে। তাহলে একই ঘটনার মামলায় মেজর শাহজাহান ওমর জামিন পেয়ে নৌকার এমপি হলেন কিভাবে? তাহলে তো বুঝা যায় যে- এটা সাজানো ও পরিকল্পিত ঘটনা। এখানেই বুঝা যায় এই সরকার জনগণের সরকার নয়।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, দেশের কোনো পেশার মানুষ আজ নিরাপদ নয়। এখানে কেউ ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রতিবাদ করতে পারে না। কারো জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। অনেক নেতাকর্মী ও পেশাজীবী নেতাদের গ্রেফতার করে কারাগারে নির্যাতন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আজকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জীবন অতীষ্ঠ। ৫৫ টাকার চিনি কিনতে হচ্ছে দেড় শ’ টাকার বেশি দামে। তেল, ডাল, চাল সবকিছুর দাম আকাশছোঁয়া। দেশের বর্তমান শাসন অতীতের ইয়াহিয়া এবং আইয়ুব খানের আমলকেও ছাড়িয়ে গেছে।

ডা. জাহিদ বলেন, এ ধরনের অচলাবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদেরকে রাজপথেই এই সরকারের পদত্যাগ এবং ডামি সংসদ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। তবেই আমাদের ভোটাধিকার ও হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে এবং জনগণের বিজয় হবে ইনশাআল্লাহ।