1. »
  2. জাতীয়

দেশ ও জাতি দুঃসময় পার করছে

শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪ ০৮:৫৫ পিএম | আপডেট: শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪ ০৮:৫৫ পিএম

দেশ ও জাতি দুঃসময় পার করছে

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও সংগঠনের নেতারা বলেছেন, দেশ ও জাতি এখন বড় দুঃসময় ও কঠিন সময় পার করছে। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে ডা. জাফরুল্লাহর মতো দেশপ্রেমিক, আজীবন মুক্তিযোদ্ধার বড় প্রয়োজন ছিল।

আজ শনিবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি মরহুম ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত নাগরিক স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। রজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ স্মরণসভার আয়োজন করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণসভা আয়োজন কমিটি।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী পুরো জাতির অভিভাবক ছিলেন। আজীবন বিপ্লবী মানুষ ছিলেন। নিজের জীবনে কখনো তিনি ‘না’ বলতে শিখেননি। তার জীবনে কখনো পরাজিতবোধ ছিল না। আজীবন যুদ্ধ করে গেছেন সমাজকে পরিবর্তনের জন্য, মানুষের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য।

তিনি বলেন, এখন দেশ ও জাতি বড় দুঃসময় পার করছে, কঠিন সময় পার করছে। দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অঙ্গনে ভয়াবহরকম আক্রমণ চলছে। নিগৃত হচ্ছে, নির্যাতিত হচ্ছে এ দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ। এই দুঃশাসনের অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য হাত পা ছুঁড়ছি। যারা রাজনীতি করি, রাজনৈতিক কর্মী আছি তারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি। নির্বিচারে নির্যাতিত হচ্ছি, অনেকে জীবন দিচ্ছেন, প্রাণ দিচ্ছেন। তারপরও এই দানবকে সরানো যাচ্ছে না। এটা বাস্তবতা। এর জন্য সকল জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। সবাইকে এক হয়ে সোচ্চার হয়ে শুধু রাজপথে নয়, সোচ্চার কণ্ঠে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ঝাঁকি দিতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভয়াবহ শাসনের মধ্যে পড়েছে দেশ। অবলীলায় হত্যা করা হয়, গুম করা হয় এখানে। বিচার ব্যবস্থা, জনগণের ভোটাধিকার ধ্বংস করা হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থাকে উপড়ে ফেলা হয়েছে। সব মানুষকে দাসানুদাসে পরিণত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার লেশমাত্র নেই এখানে। সেই চেতনাকে ফিরিয়ে আনতে হলে নতুন করে সবাইকে চিন্তা করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে ডা. জাফরুল্লাহর প্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার জীবনে চারটি বিষয়ে মূলত কাজ করেছেন। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবায় যেখানে সাধারণ মানুষ সর্বসান্ত হয়ে রাস্তায় বসে পড়তেন সেখানে তিনি মনোযোগী ছিলেন। নারীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি নারীর সম্মান নিয়ে সচেতন ছিলেন। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিষয়ে তিনি সবসময়ে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন। এছাড়া দেশের সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি দিনের পর দিন দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত তার পদচারণা ছিল। ডা. জাফরুল্লাহর পূর্ণ জীবনে কোনো বিচ্যুতি হয়নি তবে তার অনেক আকাঙ্ক্ষাও পূরণ হয়নি।

তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কার্যকরী কৌশলী জোয়ার দরকার। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই জোয়ার সৃষ্টি করলে দেশ এগিয়ে যাবে।

সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অকুতোভয় ডা. জাফরুল্লাহকে দেশের জন্য প্রয়োজন ছিল। তিনি সত্য ও দেশের পক্ষে ছিলেন। মানুষের মুক্তির জন্য আজীবন লড়াই করে গেছেন। দেশে মুখোশধারী মুক্তিযোদ্ধার বাইরে তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।

আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের তানিয়া রব, গণফোরামের সুব্রত রায় চৌধুরী, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, পরিবেশ আইনজীবী সমিতি-বেলা’র সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ঢাবির অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ফটো সাংবাদিক শহীদুল আলম, ব্রতী’র শারমিন মোর্শেদ, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর, কর্ণেল অব. মিয়া মশিউজ্জামান, ব্যবসায়ী আব্দুল হক, মায়ের ডাক’র সানজিদা, জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মেয়ে বৃষ্টি চৌধুরীসহ আরও অনেকে।