গাজা শহরে ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলি বাহিনী, একদিনে আরও ৬৩ ফিলিস্তিনি নিহত
রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫ ১১:৩০ এএম | আপডেট: রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫ ১১:৩০ এএম

গাজা সিটির আরও গভীরে প্রবেশ করেছে ইসরায়েলি সেনারা। এসময় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে অন্তত ৬৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে চিকিৎসা সূত্র। নিহতদের মধ্যে নারী এবং শিশুরাও রয়েছে।
গতকাল শনিবার (২৩ আগস্ট) আল-জাজিরা অ্যারাবিকের পাওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ইসরায়েলি ট্যাংক গাজার সাবরা এলাকায় ঢুকে পড়েছে। সাবরা শহরের জেইতুন অঞ্চলের কাছে অবস্থিত, যা গত এক সপ্তাহ ধরে অব্যাহতভাবে ইসরায়েলি বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
দক্ষিণ গাজায় গণহত্যা
শনিবার দিনের শুরুতে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের উত্তর-পশ্চিমের আসদা এলাকায় বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর তাঁবুতে গোলাবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ১৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ছয়জন শিশু।
একইদিন মানবিক সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে অন্তত ২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। খান ইউনিসের দক্ষিণ-পূর্বে ‘মোরাগ অ্যাক্সিস’-এর কাছে একজন ও ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত নেতজারিম করিডরের কাছে আরেকজন ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত হন।
অনাহারে মৃত্যু ও দুর্ভিক্ষ
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টি ও অনাহারে আরও আটজন মারা গেছেন, যাদের মধ্যে দুইজন শিশু। ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত অনাহারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮১ জনে। তাদের মধ্যে অন্তত ১১৪ জন শিশু।
শুক্রবার জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে। এটি মধ্যপ্রাচ্যে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ ঘোষণার ঘটনা। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এ পরিস্থিতিকে ‘মানবসৃষ্ট বিপর্যয়’ বলে বর্ণনা করেছেন।
বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা নিরীক্ষা সংস্থা আইপিসি জানিয়েছে, গাজার প্রায় ৫ লাখ ১৪ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষে ভুগছে। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এ সংখ্যা বেড়ে ৬ লাখ ৪১ হাজারে পৌঁছাতে পারে।
‘অনাহার প্রকৌশল’
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাতিসংঘের এ ঘোষণা প্রশংসনীয় হলেও অনেক দেরিতে এসেছে। তাদের ভাষায়, অনাহারের প্রকৌশল গণহত্যার অংশ—যার মধ্যে স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন খাত ধ্বংস, গণহত্যা ও প্রজন্ম নিশ্চিহ্ন করার নীতি অন্তর্ভুক্ত।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গত ২৭ মে থেকে ইসরায়েল নিজস্ব সহায়তা সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করেছে। তবে জাতিসংঘ ও প্রধান ত্রাণ সংস্থাগুলো একে অবৈধ ও মানবিক নীতির পরিপন্থি বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই ব্যবস্থার আওতায় সাহায্য নিতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭৬ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ৩০০ জনের বেশি।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬২ হাজার ৬০০ ছাড়িয়েছে।
সূত্র: আল-জাজিরা
আরও পড়ুন
- দেশত্যাগ করতে চাওয়া বিদেশিদের ভিসানীতি শিথিল করলো নেপাল
- একদিনে গাজায় অনাহারে প্রাণ গেল শিশুসহ আরও ৭ জনের
- একদিনে গাজায় আরও ৭২ ফিলস্তিনিকে হত্যা করল ইসরায়েল
- বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী
- কারফিউ উপেক্ষা করে আজও রাস্তায় নেপালের বিক্ষোভকারী তরুণরা
- নেপালে জেন-জি বিক্ষোভে নিহত বেড়ে ১৪
- নাইজেরিয়ায় জঙ্গি হামলায় ৫৫ জন নিহত
- ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল ওয়াশিংটসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর