সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ইন্দোনেশিয়া
শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৩:৫৪ পিএম | আপডেট: শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৩:৫৪ পিএম

সরকারবিরোধী তীব্র বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়া। জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের মধ্যেই সংসদ সদস্যদের জন্য মাসিক ভাতা বৃদ্ধি ঘোষণা থেকে বিক্ষোভের সূত্রপাত। পরে পুলিশের গাড়ি চাপায় ফুড ডেলিভারি কর্মীর মৃত্যুর ঘটনা বিক্ষোভে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
জানা গেছে, নিয়মিত বেতনের পাশাপাশি দেশটির ৫৮০ সংসদ সদস্যের জন্য মাসিক ৫০ মিলিয়ন রুপি বা প্রায় ৩ হাজার মার্কিন ডলারের আবাসন ভাতা অনুমোদন দেয় সরকার।
এই সংখ্যা দেশটির ন্যূনতম মজুরির ১০ থেকে ২০ গুণ বেশি। জীবনযাত্রার ব্যয়ের চাপে হাঁসফাঁস করা মানুষের কাছে এই খবর পৌঁছালে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
আগস্টের শেষের দিকে রাজধানী জাকার্তায় একটি বিক্ষোভে পুলিশের সাঁজোয়া যানের চাপায় এক ফুড ডেলিভারী কর্মীর মৃত্যু হয়। পুলিশের গাড়ি যখন আফফানকে চাপা দেয় তখন তিনি একটি ডেলিভারি দিতে যাচ্ছিলেন।
তিনি কোন আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন না। ২১ বছর বয়সী আফফান কুর্নিয়াওয়ানের মৃত্যুতে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। ফুড ডেলিভারি কর্মীদের দেখা হয়, দেশটির কর্মসংস্থানের সুযোগের অভাবের প্রতীক হিসেবে। আফফানের গল্প ইন্দোনেশিয়ার কোটি কোটি স্বল্প আয়ের মানুষের প্রতিচ্ছবি— যারা অনিশ্চিত আয়ের মধ্যে প্রতিদিন বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।এমন বাস্তবতায় আফফানের মৃত্যু বিক্ষোভকে আরো উসকে দিয়েছে।
দেশটির রাজধানী জাকার্তা থেকে শুরু করে সুমাত্রা, সুলাওয়েসি, কালিমান্তান ও বালির রাস্তায় মানুষ নেমে আসে। তাদের আটকাতে টিয়ার গ্যাস, জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। এ সময় একাধিক স্থানে সংঘর্ষ এবং সরকারি ভবন ও সংসদ সদস্যদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভ দমনে দেশটির সরকার নিরাপত্তা বাহিনীকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিলে উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়।
উত্তর সুমাত্রার ল্যাংকাটের ফুড ডেলিভারি কর্মী ইমরান বলেন, দেশকে নাড়িয়ে দেওয়া এই গণআন্দোলনের মূল কারণ বৈষম্য। অর্থনৈতিক বৈষম্য, শিক্ষাগত বৈষম্য, স্বাস্থ্য বৈষম্য এবং অসম জনসেবা মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে। একদিকে দেশটির জনগণ অর্থনৈতিক দুর্দশার মুখে অন্যদিকে তাদেরই প্রতিনিধিরা ৫০ মিনিয়ন ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়া ভাতার দাবি জানিয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের কোন চিন্তা নেই। তাদের উচিত আমাদের সমস্য সমাধান করা, আগুনে হাওয়া দেওয়া নয়। অর্থনৈতিক দুর্দশাই এই গণবিক্ষোভের কারণ। আমাদের মানুষ শান্তিকামী, আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হলে মানুষ রাস্তা থেকে ঘরে ফিরে যাবে। আমরা শুধু চাই একটি স্বচ্ছ আমলাতন্ত্র।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, বিক্ষোভের মুখে জনপ্রতিনিধিদের আবাসন ভাতা বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া তাদের বেতন বৃদ্ধি বন্ধ এবং 'অপ্রয়োজনীয়' বিদেশ ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে তাতেই যে বিক্ষোভ থেকে যাবে সেই নিশ্চয়তা নেই, বলছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র : আলজাজিরা
আরও পড়ুন
- গাজায় ইসরায়েলি কর্মকান্ডকে গণহত্যা ঘোষণা দিয়েছে আইজিএস
- আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহত ২৫০, আহত ৫০০
- গরুর মাংসে নিষেধাজ্ঞা, প্রতিবাদে বিফ ফেস্টের আয়োজন
- গাজায় চলমান যুদ্ধে ৯০০ ইসরায়েলি সেনা নিহত
- ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হুতি প্রধানমন্ত্রী
- ক্ষমতাচ্যুত থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
- চার দশকের সবচেয়ে বড় বন্যায় পাকিস্তানের পাঞ্জাব, ১৪ লাখের বেশি মানুষ পানি বন্দি
- যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্কের জবাবে পালটা পদক্ষেপ নিচ্ছে ব্রাজিল