ভারতের বিপক্ষে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:৫৩ এএম | আপডেট: মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:৫৩ এএম
ফিফা র্যাংকিংয়ে ভারত-বাংলাদেশের ব্যবধান ৪৭ ধাপের। সবশেষ র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ এক ধাপ এগিয়ে ১৮৩তম, আর ভারত দুই ধাপ নেমে ১৩৬তম। বড় ব্যবধান নিয়ে দুই দল আজ (মঙ্গলবার) ঢাকায় মুখোমুখি হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের ভালো কিছু করে দেখানোর আত্মবিশ্বাস তাদের উজ্জীবিত রাখছে। শিলংয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ভারতের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে গোলশূন্য ড্র করেছিল তারা। হামজা চৌধুরীর দল এবার ঘরের মাঠে সর্বভারতীয় দলের কঠিন পরীক্ষা নিতে শতভাগ প্রস্তুত।
ভারত-বাংলাদেশের ফুটবল লড়াই আগেও হয়েছে অনেকবার। তবে এবারের উত্তেজনা অন্যরকম। ২২ বছরের বন্ধ্যাত্ব কাটাতে চায় বাংলাদেশ। ছয় বছর আগে তো কলকাতায় ভারতকে হারিয়ে দিতে বসেছিল তারা। জিততে জিততে শেষ পর্যন্ত ড্র করেছে। দুই দলের লড়াইয়ের এমন অনেক স্মৃতি রয়েছে। আজ আবার যখন দুই দল মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন সেই স্মৃতির কিছু অংশ ফেরানো যাক-
শুরুতে ভারতের একচ্ছত্র আধিপত্য
১৯৭৮ সালে ব্যাংকক এশিয়ান গেমসে ভারত ও বাংলাদেশ প্রথমবার আন্তর্জাতিক ফুটবলে মুখোমুখি হয়। সেই ম্যাচ একদমই ভুলে যেতে চাইবে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ৩-০ গোলে। গোল করেছিলেন বিদেশ বোস, হারজিন্দর সিং ও জাভিয়ের পিয়াস। নয়াদিল্লিতে পরের এশিয়ান গেমসেও হেরেছিল বাংলাদেশ। তারপর একে একে আরও তিন হার। ১৯৯৭ সালে কাঠমান্ডু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচও বড় হারের কারণে ভুলে যেতে চাইবে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে ৭৪ মিনিট গোলপোস্ট অক্ষত রাখতে পেরেছিল তারা। তারপর তিন মিনিটের মধ্যে আইএম বিজয়ন দুটি গোল করেন, বাংলাদেশের যন্ত্রণা আরো বাড়িয়ে দেন বাইচুং ভুটিয়া।
অবশেষে এলো জয়
১৯৯১ সালের ২৬ ডিসেম্বর দুই দলের দ্বৈরথে বাংলাদেশের জন্য স্মরণীয় দিন। কলম্বো সাফ গেমসে সেদিন বিজয় উৎসব করেছিল লাল-সবুজরা। সুগাথাদাসা স্টেডিয়ামে ২-১ গোলে ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। দুটি গোলই করেন রুমি রিজভী কলিম। ২০ ও ৭৫ মিনিটে তার গোলের পর ৮৮ মিনিটে গডফ্রে পেরেইরা ব্যবধান কমান। তবে বাংলাদেশের প্রথম জয় হাতছাড়া হয়নি।
এগিয়ে গিয়েও বাংলাদেশের হতাশা
ছয় বছর আগে কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে এগিয়ে থেকেও ১-১ গোলে ড্র করতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। ভারতের বিপক্ষে এমন উদাহরণ অনেক আছে বাংলাদেশের। ১৯৮৫ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কলকাতায় আশীষ ভদ্রের গোলে ১–০ তে এগিয়ে গিয়েও ২–১ এ হেরেছিল বাংলাদেশ। এরপর আরও চারটি ম্যাচে এগিয়ে থেকেও জয় হাতছাড়া হয়েছে। অবশ্য হারতে হয়নি। ১৯৮৯ ইসলামাবাদ সাফ গেমস, ২০১৩ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ, ২০১৪ গোয়া প্রীতি ম্যাচ ও ২০১৯ কলকাতার বাছাইপর্বে ড্র করে বাংলাদেশ।
মাঠ থেকে গ্যালারি, উত্তপ্ত লড়াই
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে অতীতেও উত্তাপ ছড়াতে দেখা গেছে। এমনকি সেটি মাঠ থেকে গ্যালারি পর্যন্ত বিস্তৃত। ১৯৮৫ ঢাকার সাফ ফাইনালের ঘটনা সেটি। উত্তেজনায় গ্যালারি এতটাই উত্তপ্ত হয়েছিল যে ম্যাচ কিছুক্ষণ বন্ধ রাখতে হয়। ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হওয়ার পর টাইব্রেকারে ভারতের কাছে হারে বাংলাদেশ।
২০০৫ করাচি সাফেও গ্যালারি ছিল উত্তাল। দর্শকদের শান্ত করতে ভারতের কোচ পিকে ব্যানার্জি ও বাংলাদেশের কোচ আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানি হস্তক্ষেপ করেন। তারা গ্যালারির উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে দর্শকদের শান্ত থাকার অনুরোধ করেন।
টাইব্রেকার মানেই বাংলাদেশের হতাশা
টাইব্রেকারে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের গল্পটা হতাশার। দুইবার দুই দলের ফল নিষ্পত্তি হয়েছিল পেনাল্টি শুটআউটে। দুটিতেই জিতেছিল ভারত। প্রথমটি ১৯৮৫ ঢাকা সাফ ফাইনাল নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে ড্র হয়েছিল ১-১ গোলে। তারপর টাইব্রেকারে বাংলাদেশ হারে ৪-১ গোলে। অন্য ম্যাচটি ১৯৯৫ সালের কলম্বো সার্ক গোল্ডকাপ সেমিফাইনালে। নির্ধারিত সময় শেষ হয় গোল ছাড়াই, তারপর টাইব্রেকারের সামনে। ৪-২ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ।
দুই দলের সবশেষ জয়
বাংলাদেশ শেষবার ভারতকে হারিয়েছিল ২২ বছর আগে। ঢাকায় ২০০৩ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালের ফল সেদিন এসেছিল গোল্ডেন গোলে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে ড্র থাকার পর অতিরিক্ত সময়ের সপ্তম মিনিটে মতিউর রহমান মুন্নার গোলে জেতে বাংলাদেশ।
আর ভারত সবশেষ বাংলাদেশকে হারিয়েছিল ২০২১ সালে। দোহায় বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের সেই ম্যাচে তারা জিতেছিল ২-০ গোলে। পরে দুই দল আরো দুইবার মুখোমুখি হলেও প্রত্যেকবার ড্র হয়েছে।
আরও পড়ুন
- আয়ারল্যান্ডকে ইনিংস ব্যবধানে হারাল বাংলাদেশ
- দ্বিতীয় দিনের ১৪ বলেই অলআউট আয়ারল্যান্ড, ভালো শুরু বাংলাদেশের
- বাংলাদেশের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে আয়ারল্যান্ড
- দুই ম্যাচ সমনে রেখে ঢাকা পৌঁছেছেন হামজা চৌধুরী
- পদত্যাগ করছেন সালাহউদ্দিন
- প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সন্ধ্যায় উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
- থাইল্যান্ডের কাছে বড় ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ
- কলম্বিয়াকে হারিয়ে ১৮ বছর পর ফাইনালে আর্জেন্টিনা