ডেঙ্গুতে ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৭০৪
রবিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৫ ০৫:২১ পিএম | আপডেট: রবিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৫ ০৫:২১ পিএম

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গতকাল রবিবার ডেঙ্গুতে ১২ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা এক দিনের হিসাবে এ বছরের সর্বোচ্চ। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭৪০ জন রোগী—এক দিনে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও সর্বোচ্চ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, রবিবারের মৃত ১২ জনের মধ্যে শনিবার মারা যাওয়া তিনজন আছে।
এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর এক দিনে সর্বোচ্চ ছয়জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল অধিদপ্তর। এ নিয়ে এ বছর মশাবাহিত এই রোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৯। আর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা হয়েছে ৪১ হাজার ৮৩১।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রবিবারের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জন পুরুষ, ছয়জন নারী।
গত দুই দিনে যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজে; দুজন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে; দুজন বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ঢাকা মেডিক্যাল, মুগদা মেডিক্যাল, ডিএনসিসি কভিড‑১৯ হাসপাতাল, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল ও চট্টগ্রামের এভার কেয়ার হাসপাতালে একজন করে মারা গেছেন।
মৃত্যুর ৬০% ঢাকায় : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মৃত্যুর সবচেয়ে বেশি—১০৮ জন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায়; যা মোট মৃত্যুর ৬০.৩৩ শতাংশ। এরপর বরিশাল বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ২৭ জন (১৫.০৮%), চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩ জন (১২.৮৪%)। রাজশাহী বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ১০ জন (৫.৫৮%), ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগে পাঁচজন করে, মোট ৫.৫৮ শতাংশ।
ঢাকা বিভাগে (মহানগরীর বাইরে) দুজন (১.১১%)। রংপুর ও সিলেট বিভাগ থেকে কোনো মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়নি।
১৬‑৩০ বছর বয়সীদের আক্রান্ত ও মৃত্যু বেশি : বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৫ হাজার ৯৪৬ জন, যা চলতি বছরের মোট আক্রান্তের ৩৮.১২ শতাংশ। এই বয়সে মারা গেছেন ৬৩ জন, যা মোট মৃত্যুর ৩৫.১৯ শতাংশ।
সর্বোচ্চ মৃত্যু ঘটেছে এই বছরের সেপ্টেম্বরে—এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৫৭ জন।
জানুয়ারি মাসে হয়েছিল ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে সাতজন, মে মাসে তিনজন, জুনে ১৯ জন ও আগস্টে ৩৯ জন মারা গেছেন। মার্চ মাসে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি।
বড় ধরনের দ্রুত মৃত্যু, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই : এই বছরের মৃত্যু নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি বিশ্লেষণ করেছে; ৭৬টি মৃত্যু নিয়ে করা হয়েছে বিশ্লেষণ। এর মধ্যে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে—অর্থাৎ মোট মৃত্যুর ৪৭ শতাংশের বেশি মাত্র এক দিনের ভেতর। ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে দুই দিনের মধ্যে; বাকি ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে তিন‑পাঁচ দিনের মধ্যে।
ঢাকায় আক্রান্ত বাড়ছে : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে ১০ হাজার ৩৫৫ জন রোগীর মধ্যে তিন হাজার ৩৮৩ জন (৩২.৩৭%) ঢাকা মহানগরীতে। এরপর বিভাগের ভিত্তিতে বরিশাল বিভাগে ১৯.৬৭ শতাংশ, ঢাকা বিভাগে (মহানগরীর বাইরে) ১৭.৯৬ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৬.৩৬ শতাংশ।
চলতি বছরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রোগী বরিশাল বিভাগে, ১২ হাজার ১৭০ জন (মোট রোগীর ২৯.০৯%), ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ১০ হাজার ৯৭৭ জন (২৬.২৪%)।
এ বছর ডেঙ্গুতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৬৮৪ জন। অন্য মাসগুলোর পরিসংখ্যান : জানুয়ারিতে এক হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪, মার্চে ৩৩৬, এপ্রিলে ৭০১, মে মাসে এক হাজার ৭৭৩, জুনে পাঁচ হাজার ৯৫১, আগস্টে ১০ হাজার ৪৯৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে ২০০০ সাল থেকে। এ সময় সবচেয়ে বেশি তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ২০২৩ সালে। মারা গেছে এক হাজার ৭০৫ জন।
আরও পড়ুন
- ছেলেকে আনতে গিয়ে নিখোঁজ সেই মায়ের লাশ মিলল ডিএনএ পরীক্ষায়
- জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভারতীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল
- গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, নতুন ভর্তি ১৫৯
- সাড়ে ৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেবে সরকার
- হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেলে পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা উদযাপিত
- বাংলাদেশে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু
- এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সতর্কতা জারি
- সারাদেশে ডেঙ্গুতে আরও ৭ জনের মৃত্যু