1. »
  2. মতামত

দেড় যুগ অপেক্ষার অবসান, ফিরছেন তারেক রহমান

সংবাদদাতা: আতিকুর রহমান রুমন সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০২:৫১ পিএম | আপডেট: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০২:৫১ পিএম

দেড় যুগ অপেক্ষার অবসান, ফিরছেন তারেক রহমান

বাংলাদেশের রাজনীতিতে কিছু নাম কেবল ব্যক্তি নয়, সেগুলো সময়ের দলিল, গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ইতিহাস এবং লাখো-কোটি মানুষের বুকের ভিতর জমে থাকা আশা-বেদনার প্রতীক। তারেক রহমান তেমনই একটি নাম। দীর্ঘ ১৮ বছর যাঁকে ঘিরে অপেক্ষা, আকুতি, অভিমান আর প্রত্যাশা, অবশেষে সেই মানুষটির স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে এসেছে। ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমানের নিজের দেশে ফেরা নিছক কোনো ব্যক্তিগত বা দলীয় ঘটনা নয়; এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক আবেগঘন, গভীর অর্থবহ অধ্যায়।  লন্ডনে অবস্থানরত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবরে সারা দেশে নেতা-কর্মীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। দীর্ঘদিন ধরে যাঁকে ঘিরে আন্দোলন, প্রত্যাশা ও সংগ্রাম-সেই নেতৃত্ব অবশেষে স্বশরীরে দেশের মাটিতে ফিরছেন। নেতা-কর্মীরা বিশ্বাস করেন, তাঁর প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়েই বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি আরও সুসংহত হবে এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের মাঠে নতুন গতি সঞ্চার হবে।

তারেক রহমান জন্মেছেন এক ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবারে। তাঁর পিতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা। মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তারেক রহমান কেবল উত্তরাধিকারসূত্রে নেতা হননি; রাজনীতিতে তাঁর প্রতিটি ধাপ ছিল অভিজ্ঞতা, সংগ্রাম ও সাংগঠনিক দক্ষতায় অর্জিত।

১৯৮৯ সালে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে তারেক রহমানের আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক যাত্রা শুরু। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে মায়ের পাশে থেকে রাষ্ট্র পরিচালনার বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ঐতিহাসিক বিজয়ের নেপথ্যে তাঁর সাংগঠনিক ভূমিকা দলীয় ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত হয়। তখন অনেকেই বলেছিলেন, ‘তারেক রহমানের মধ্যে শহীদ জিয়াউর রহমানের ছায়া স্পষ্ট।’ এই উত্থানই একসময় তাঁকে পরিণত করে ষড়যন্ত্রের প্রধান টার্গেটে। ২০০৭ সালের এক-এগারো-পরবর্তী সেনাসমর্থিত সরকারের সময় বহু বিতর্কিত ও রাজনৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। রিমান্ডের নামে চালানো হয় অকথ্য অমানবিক নির্যাতন। মেরুদণ্ড, পাঁজর ও হাঁটুতে গুরুতর আঘাতে তিনি প্রায় পঙ্গুত্বের পর্যায়ে পৌঁছান। একই সময়ে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁর মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তাঁর ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোকে। কোকো, যিনি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। প্রতিহিংসাবশত তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী সময়ে প্রবাস জীবনের নিঃসঙ্গতায় কোকোর অকালমৃত্যু জিয়া পরিবারে নেমে আসে গভীর শোক।

দীর্ঘ কারাভোগ ও অমানবিক নির্যাতনে যখন তারেক রহমান প্রায় মৃত্যুর মুখোমুখি, তখন আদালতের নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০০৮ সালে তাঁকে পাঠানো হয় লন্ডনে। কিন্তু সেই যাত্রা ছিল না কেবল চিকিৎসার; সেটিই হয়ে ওঠে জন্মভূমি থেকে এক দীর্ঘ বিচ্ছেদের শুরু। প্রিয় দেশ, প্রাণপ্রিয় মা, প্রাণপ্রিয় ছোট ভাই, পরিবার-আত্মীয়স্বজন, সহযোদ্ধা নেতা-কর্মী এবং লাখো-কোটি মানুষের ভালোবাসা পেছনে ফেলে তাঁকে পাড়ি দিতে হয় এক নিঃসঙ্গ প্রবাসের জীবনপ্রবাহে। যে ১৮টি বছর কেটেছে অগণিত কষ্ট, বেদনা ও অনিশ্চয়তার ভিতর দিয়ে, যা নামমাত্র প্রবাসজীবন হলেও বাস্তবে ছিল এক নীরব, নির্মম নির্বাসন। দেশের বাইরে থেকেও তারেক রহমান রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন হননি। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ভার্চুয়াল সভা, ভিডিও কনফারেন্স ও সরাসরি দিকনির্দেশনার মাধ্যমে নানাবিধ ষড়যন্ত্রের মধ্যেও তিনি বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন। মায়ের অসুস্থতায় দলীয় দায়িত্ব আরও দৃঢ়ভাবে কাঁধে তুলে নেন তারেক রহমান। ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে বিএনপির আন্দোলন, সংগঠন ও প্রতিরোধে তাঁর নেতৃত্ব ছিল নির্ণায়ক। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৪ সালের গণ অভ্যুত্থানের পেছনেও তাঁর দূরদর্শী কৌশল ও সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

রাজনীতির বাইরেও তারেক রহমান একজন মানবিক মানুষ হিসেবে পরিচিত। অসহায় মানুষের চিকিৎসা ও অর্থ সহায়তা, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার দায়িত্ব গ্রহণ, শহীদ ও নির্যাতিত পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, অভুক্ত প্রাণীদের খাদ্য ও আহত পশুপাখির চিকিৎসাসেবা প্রদান-এসব কাজ তিনি নীরবে করে আসছেন। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর মাধ্যমে মানবিক সহায়তা তাঁর রাজনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি বারবার বলেছেন, রাজনীতি কেবল ক্ষমতার জন্য নয়; মানুষের কল্যাণই তাঁর মূল দর্শন।

প্রাণপ্রিয় জননী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন। এমন সময়ে একজন সন্তানের জন্য মায়ের পাশে না থাকতে পারার বেদনা তারেক রহমান বহুবার প্রকাশ করেছেন। তবে ভিসা জটিলতা, রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং সর্বোপরি নিরাপত্তাঝুঁকি এত দিন তাঁর ফেরার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কারণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে রাষ্ট্রনায়ক ও জনপ্রিয় নেতাদের হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ নজির রয়েছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী ও বেনজির ভুট্টোর মতো নেতাদের করুণ পরিণতি প্রমাণ করে তারেক রহমানের নিরাপত্তাঝুঁকি কেবল ব্যক্তিগত নয়, বরং রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক মাত্রার।

সম্প্রতি দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও গভীর উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই, ১২ ডিসেম্বর, রাজধানী ঢাকায় দিনের আলোয় প্রকাশ্যে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় গুলি করা হয় ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি, ১৮ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। একই দিনে রাজধানীর হাজারীবাগ থানার জিগাতলা এলাকা থেকে এনসিপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ (ধানমন্ডি থানা) সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী জান্নাতারা রুমীর লাশ উদ্ধার করা হয়। ওসমান হাদিকে হত্যার পর থেকেই দেশজুড়ে নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্কের আবহ আরও ঘনীভূত হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তোলার অপচেষ্টা চলছে। পতিত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই সহিংস ষড়যন্ত্রে সক্রিয় বলে অভিযোগ রয়েছে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা এখানেই থেমে নেই, গোয়েন্দা তথ্যে উঠে এসেছে, তথাকথিত ‘হিট লিস্টে’ ৫০ থেকে ৬০ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম রয়েছে, যেখানে বিএনপি, এনসিপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও অন্তর্ভুক্ত। এই সহিংসতার ধারাবাহিকতা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকায় চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনি প্রচারণায় সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। এতে এরশাদ উল্লাহসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন এবং গুলিবিদ্ধ সরওয়ার হোসেন বাবলা ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। ৩০ নভেম্বর খুলনা আদালত চত্বরে প্রকাশ্যে দুইজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ১৭ নভেম্বর মিরপুরে দোকানের ভিতরে ঢুকে যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যার ঘটনাও জাতিকে নাড়িয়ে দেয়। এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি ভয়াবহ প্রবণতার প্রতিচ্ছবি।

‘বাংলাদেশ টুডে’-এর ১৫ জুলাই ২০২৫-এর শিরোনাম জানাচ্ছে, ‘১০ মাসে ৩৫৫৪ খুন, ৪১০৫ ধর্ষণ, ৮১৯ অপহরণ।’ আবার ১৫ অক্টোবর সময় টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গত আট মাসে প্রতিদিন গড়ে ১১ জনকে হত্যা করা হয়েছে।’ এমন অসংখ্য শিরোনামে আজ দেশের গণমাধ্যম ভরে উঠছে, যা স্পষ্ট করে দিচ্ছে দেশ ক্রমেই সহিংসতা ও নিরাপত্তাহীনতার এক ভয়ংকর চক্রে আবদ্ধ হয়ে পড়ছে। নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা, রাজনৈতিক সহিংসতা, মব জাস্টিস, অবৈধ অস্ত্রের সক্রিয়তা এবং দলীয় ও আন্তদলীয় সংঘর্ষ; সবকিছু মিলিয়ে হাইপ্রোফাইল নেতার নিরাপত্তা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশিবিদেশি ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা। পার্শ্ববর্তী দেশের কৌশলগত স্বার্থ, অভ্যন্তরীণ সুবিধাবাদী চক্র এবং আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সক্রিয়তা তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনকে কেবল রাজনৈতিক নয়, বরং আঞ্চলিক ভূরাজনীতির বিষয়েও পরিণত করেছে।

তারেক রহমান বিএনপির রাজনৈতিক কান্ডারি। এই মুহূর্তে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো তাঁর সমকক্ষ আর কেউ নেই। সুতরাং তাঁর প্রতি সামান্যতম আঘাত মানেই কেবল একটি দলের ক্ষতি নয়; তা দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্যও গভীর হুমকি। এই বাস্তবতায় তাঁর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কোনো পক্ষের সদিচ্ছার ওপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয় নয়, এটি সময়ের অপরিহার্য দাবি। সব ভয়ভীতি ও শঙ্কা উপেক্ষা করে ২৫ ডিসেম্বর জনতার আস্থার বাতিঘর তারেক রহমান স্বদেশে ফিরছেন। তাঁর আগমনকে ঘিরে রাজধানীর চিত্র যে অভূতপূর্ব হবে, তা সহজেই অনুমেয়। বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত পথে পথে নেমে আসবে মানুষের অবিস্মরণীয় জনস্রোত-আবেগ, প্রত্যাশা ও ভালোবাসায় মুখর হবে রাজপথ। দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, এই জনসমুদ্রই তাঁর জন্য সবচেয়ে বড় নিরাপত্তাঝুঁকির উৎস হয়ে উঠতে পারে। ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে, এমন বিশাল ভিড়ের মধ্যেই আততায়ীরা সুযোগ খোঁজে। কাজেই এই ভিড়ে কেউ তাঁকে হত্যার চেষ্টা করবে না, এমন নিশ্চয়তার দায় কেউই নিতে পারে না। বাস্তবতা কঠোর ও নির্মম : তাঁর জীবনের ওপর ঝুঁকি গুরুতর এবং তাৎক্ষণিক। এই প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের নিরাপত্তা কোনো আনুষ্ঠানিক আয়োজন বা রাজনৈতিক সৌজন্যের বিষয় নয়; এটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ দায়িত্ব। বিমানবন্দর থেকে বাসভবন পর্যন্ত পুরো যাত্রাপথে কঠোর নিরাপত্তাবলয়, নিবিড় গোয়েন্দা নজরদারি এবং আগাম প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া এক কদমও এগোনো উচিত নয়। একই সঙ্গে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের আবেগ সংযত রেখে সর্বোচ্চ শৃঙ্খলার পরিচয় দিতে হবে।  ভালোবাসা প্রকাশের নামে রাস্তায় অযথা ভিড় জমলে, সেই ভালোবাসাই হয়ে উঠতে পারে তাঁর জন্য সবচেয়ে বড় বিপদ।

এই মুহূর্তে একটি ভুল সিদ্ধান্ত, সামান্য অবহেলা কিংবা ক্ষুদ্রতম শিথিলতাও ডেকে আনতে পারে অপূরণীয় বিপর্যয়। ইতিহাস বারবার আমাদের সতর্ক করে দিয়েছে, নিরাপত্তার প্রশ্নে উদাসীনতার মূল্য কখনোই ক্ষমাযোগ্য নয়। তাই তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন যেন কেবল উল্লাস ও আশার বার্তা বহন করে, কোনোভাবেই যেন শোক ও অশ্রুর অধ্যায় রচনা না করে, এই গুরুদায়িত্ব সরকার, রাষ্ট্রযন্ত্র এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সর্বোচ্চ দায়িত্ববোধ, সংযম ও পেশাদারত্বের সঙ্গে পালন করতে হবে। আবেগের প্রকাশ যদি শৃঙ্খলার সীমা অতিক্রম করে, তবে সেই আবেগই হয়ে উঠতে পারে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি এই বাস্তবতা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।  দেড় যুগের প্রতীক্ষা শেষে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন আশার সূচনা করবে। এটি কেবল একজন নেতার ঘরে ফেরা নয়-এটি ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ। এই সময়ে দায়িত্বহীনতা নয়, প্রয়োজন সর্বোচ্চ সতর্কতা, সংযম এবং রাষ্ট্রীয় প্রজ্ঞার পূর্ণাঙ্গ প্রয়োগ। তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন জাতির জন্য আশার দীপশিখা হয়ে উঠুক-এই প্রত্যাশাই আজ লাখো-কোটি মানুষের হৃদয়ের একক প্রত্যাশা।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, আহ্বায়ক আমরা বিএনপি পরিবার ও সদস্য বিএনপি মিডিয়া সেল