বিএনপির হয়েই রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে চান মেজর হাফিজ
বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৩ ০১:৫৯ পিএম | আপডেট: বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৩ ০১:৫৯ পিএম
অন্যকোন রাজনৈতিক দলে যোগ দিচ্ছেন না সাফ জানিয়ে দিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অবঃ হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেছেন, ৩১ বছরের রাজনীতিতে বিএনপির হয়েই রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে চাই।
আজ সকাল ১১ টায় তার বনানীর নিজ বাসভবনে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নিজের অবস্থান তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রীর হাসান মাহমুদের বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনপির গুরুত্বহীন ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে দাবি করি। শারীরিক অসুস্থ্যতার জন্য রাজনীতিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। রাজনীতি থেকে দুরে অবস্থান করছি। তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য সঠিক নয়। কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে এখন জড়িত নই। শারীরিক কারনে শীঘ্রই রাজনীতি থেকে অবসর নিবো। ৩১ বছরের রাজনীতি করে এই দল থেকেই বিদায় নিতে চাই।
পুলিশের স্কট নিয়ে ৮ বছর পর এলাকায় যেতে পেরেছেন বলে জানান বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ২৩ বছর আমি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। ড. মোশাররফ ও রফিকুল ইসলাম মিয়া ছাড়া সবাই আমার জুনিয়র । কিন্তু আমি ছাড়া সবাই উপরে উঠে গেছে। আমি পদবীর জন্য রাজনীতি করি না। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে রাজনীতি করেছি। তার আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে দলে যোগদান করেছি।
বেগম জিয়ার অনুপুস্থিতিতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। জুনিয়র নেতারা সিনিয়র পদপদবী পেলেও কোন অভিযোগ নেই। শারীরিক অসুস্থ্যতার কারনে নিস্ক্রিয় আছি। রাজনীতে এখন কোন আগ্রহ নেই।
মেজর হাফিজ বলেন, ২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর এ কারন দর্শাও নোটিশ দেয়া হয় আজগুবি ১১ টি অভিযোগে। সরকার বিরোধী কর্মসুচিতে অংশ না নিলেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিন বছর পার হলেও নোটিশের উত্তরের কোন পাল্টা জবাব পাইনি। ৩১ বছর রাজনীতি করে এমন প্রাপ্তি পীড়াদায়ক।
দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অনেক ভুল আমরা করেছি। দলীয় বলার সুযোগ নাই। ৮ বছর কোন কাউন্সিল হচ্ছে না। জাতির স্বার্থে কিছু কথা বলতে হয়। দলের সব নেতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই কথা বলা। বিএনপিতে একটি সত্যিকথা বলা লোক চোখে পরে নি সাইফুর রহমান ছাড়া । সবাই ইয়েস স্যার, রাইট স্যার ,বলা লোক ।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে শারীরিক কারনে অংশ নেয়া সম্ভব নয় । জনগনের সাথে কথা বলে রাজনীতি থেকে বিদায় নেয়ার চেষ্টা করবো।
মেজর হাফিজ বলেন, বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিৎ। কেয়ারটেকারের কথা না ভেবে বিকল্প ভাবা উচিৎ। জাতিসংঘের মধ্যস্ততায় বিএনপির নির্বাচনে যাওযা উচিৎ। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে। সুষ্ঠু নির্বাচন আদায়ের সক্ষমতা লাগে তা নেই বিএনপির। বিএনপির আন্তর্জাতিক যোগাযোগ দুর্বল।
সরকারে সমালোচনা করে তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। জনগন সুযোগ পেলে সঠিক বিচার করে। ক্ষমতাসীনরা মনে করে উন্নয়ন কাজে ভোট পাবে। আসলে মানুষ বিচার করে নিত্যপন্যের দাম, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় শুধু উন্নয়ন কাজে ভোট হয় না।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, অনুগ্রহ করে সামাজিক সম্প্রীতির দিকে লক্ষ্য রেখে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করুন। কারন নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না।
পাশের দেশ ভারত দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন করেছে। শক্ত ভিত্তির ওপর তাদের গনতন্ত্র। তাদের অনুসরন করে আমাদের এগিয়ে যেতে চাই।
বিএনপির ও অন্যান্য দলের সাথে বসে সুষ্ঠু ভোটের ব্যবস্থার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের অবস্থা খারাপ হলে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল দায়ী থাকবে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হাফিজ বলেন, দলের সংস্কার করতে হবে। ত্যাগী নেতাদের মুল্যায়ন করতে হবে।
কেন দলের মধ্যে এক নায়কত্ব হচ্ছে, কেন পদ বানিজ্য হচ্ছে প্রশ্ন রাখেন এই নেতা।
হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারকারী আমলাদের পাচার করা টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান।
আরও পড়ুন
- মানুষের ভোটাধিকারের মাধ্যমেই গণতন্ত্র ফিরবে : মঈন খান
- আন্দোলনে নিহত ও কারাবন্দি নেতাকর্মীর পরিবারের পাশে বিএনপি
- অবরোধ সফলে রিজভীর নেতৃত্বে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল
- মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি দুপুরে
- ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ঘোষণা বিএনপির
- মামলা ও গ্রেপ্তারে নিজেদের পতন ত্বরান্বিত করছে সরকার : ১২ দলীয় জোট
- এবার ৮-৯ নভেম্বর সর্বাত্মক অবরোধ ডাকলো এলডিপি
- অগ্নিসংযোগকারীকে ধরিয়ে দিলেই ২০ হাজার টাকা পুরস্কার