1. »
  2. অপরাধ

‘নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ খরচ হয়েছে, সেটা তুলবোই, এটুকু অন্যায় করবো’

শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪ ০২:৫৪ পিএম | আপডেট: শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪ ০২:৫৪ পিএম

‘নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ খরচ হয়েছে, সেটা তুলবোই, এটুকু অন্যায় করবো’

নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ নির্বাচনী খরচ ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা তুলতে চান। এমন একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে লালপুর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এই বক্তব্য দেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, এমপি কালাম বলছেন, আমার পাঁচটি বছরের (২০১৪-২০১৮) বেতন-ভাতার টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না। আগামীতেও থাকবে না। এবার (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে) ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা আমি তুলব। যে ভাবেই হোক তুলবই। এতটুক অনিয়ম আমি করবই। এটুকু অন্যায় করব, আর করব না। 

তিনি আরও বলেন, ওই সময় (২০১৪ সালে) ১ টাকাও খরচ হয়নি আমার। শুধু ব্যাংকে ২৫ লাখ টাকা জমা রাখতে হয়, ওটা রেখেছি। ১ টাকাও খরচ নাই, ২৫ লাখ টাকা তুললাম। ট্যাক্স ফ্রি ২৭ লাখ টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেছিলাম। চাইলে ১ কোটি টাকা দিয়ে কিনতে পারতাম। আমার যখন টাকা নাই, তখন ২৭ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি। এবার আমি কিনব, ওই টাকা দিয়ে কিনব। ওই যে টাকা, ওই টাকা তুলে নিব আমি। খালি ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা তুলব।

প্রকাশ্যে এমপির এমন বক্তব্যে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে জেলাজুড়ে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আখতার বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। উনার বক্তব্যে (সংসদ সদস্য) উনি বলেছেন, এখানে কোনো কথা নেই।

বক্তব্যর বিষয়ে জানতে চাইলে এমপি কালাম বলেন, আমি বলেছি আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার বড় ভাই মমতাজ উদ্দিনও একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। গত পাঁচ বছরে সাবেক এমপি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কিছুই করেননি। তাই আমি বলেছি, আমি টাকা কোথায় পাবো। টাকা পেলে আমি সবার জন্যই কিছু করব।

এ বিষয়ে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, আপনারাই দেখেন কীভাবে তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। এটা একদিকে শপথের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন অন্যদিকে নির্বাচনী বিধিরও লঙ্ঘন। একজন প্রার্থী কি নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন?

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা একাধিক নেতা বলেন, আমরা তার বক্তব্যে স্তম্ভিত এবং বিব্রত বোধ করেছি। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও এমপির এমন বক্তব্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের কাছে খুব নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে বলে আমরা মনে করি।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম জানান, আমি তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুনেছি। এই বক্তব্য একান্তই তার ব্যক্তিগত। তিনি দলীয় কোনো ফোরামে এই বক্তব্য রাখেননি। তাই এ ব্যাপারে দলের কিছু আসে-যায় না।

উল্লেখ্য গত সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুলকে ১ হাজার ৯শর কিছু বেশি ভোটে পরাজিত করেন।