দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রের : তারেক রহমান
বুধবার, ১ অক্টোবর, ২০২৫ ০৬:৩৫ পিএম | আপডেট: বুধবার, ১ অক্টোবর, ২০২৫ ০৬:৩৫ পিএম
দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ বুধবার শারদীয় দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। তাদের সুখ শান্তি ও কল্যাণ কামনা করি। আবহমানকাল ধরে দেশের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ প্রতিটি গোষ্ঠী-গোত্র-সম্প্রদায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে যার যার ধর্ম পালন করে আসছে, এটি বাংলাদেশে ঐতিহ্যগত ধর্মীয় সামাজিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির সৌন্দর্য্য। শরতে বাংলাদেশের চারিদিকে কাশফুল ও শীতের আভাষ জানান দেয় এই উৎসবের বার্তা। আর উৎসব হচ্ছে অন্ধকারের গহন থেকে আলোকের উদ্ভাসন।
তিনি বলেন, একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমি মনে করি, উৎসবের ভেতর দিয়েই পরিস্ফুটিত হয়ে ওঠে আমাদের বিভিন্ন ধর্ম-গোত্র-সম্প্রদায়ের মধ্যকার পারস্পরিক বন্ধুত্ব, সম্প্রীতি, সৌহার্দ এবং ভ্রাতৃত্ব। আমাদের রাষ্ট্র এবং সংবিধানে দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী, সংশয়বাদী প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা বিধানের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
তারেক রহমান বলেন, পবিত্র হাদিসেও এব্যাপারে নির্দেশনা রয়েছে- যে ব্যক্তি রাষ্ট্রের নিরাপত্তাপ্রাপ্ত অমুসলিমকে নির্যাতন করে, তার অধিকার খর্ব করে, তাকে সাধ্যের অতিরিক্ত কাজ চাপিয়ে দেয় বা তাদের অসম্মতিতে ধন-সম্পদ হরণ করে নেয়- এ ধরণের জুলুমের বিরুদ্ধে আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) তার উম্মতদেরকে সতর্ক করে দিয়ে বলছেন- ‘কেয়ামতের দিন আমিই সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে লড়ব।’
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে দেশের একজন নাগরিক হিসেবে অপর নাগরিকের নিরাপত্তা এবং সম্মান রক্ষায় যথাযথ ভূমিকা রাখবে এবং নৈতিক দায়িত্ব পালন করবে, এটিই স্বাভাবিক রীতি। উৎপীড়ন ও প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার মধ্য দিয়ে যারা সমাজকে, মানব সভ্যতাকে ধ্বংস করতে চায়, প্রতিষ্ঠিত করতে চায় কুশাসন তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা ন্যায়সঙ্গত। শারদীয় উৎসবকে ঘিরে ফ্যাসিবাদী শাসনামলের মতো কেউ যাতে কোনোরকম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের মতো পরিস্থিতি কিংবা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার মতো কোনো অপচেষ্টা করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক এবং সজাগ থাকার জন্য আমি দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাই।
দেশের হিন্দু সম্পদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা উৎসাহ ও উদ্দীপনা সহকারে নিশ্চিন্তে নিরাপদে সারাদেশে উৎসব আনন্দ উদযাপন করুন। সৌহার্দ-সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিন। আমি এবং আমার দল বিএনপি বিশ্বাস করে- ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাবার অধিকার সবার। আমি এই আনন্দময় দুর্গাপূজার উৎসবে হিন্দু সম্প্রদায় এবং ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সংশ্লিষ্ট সকলকে আবারো আমার এবং আমাদের দল অর্থাৎ বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের দল-বিএনপি’র পক্ষ থেকে শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানাই। আমি এবারের শারদীয় দূর্গোৎসবের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করি।
অপর এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা বাংলা ভাষাভাষীর হিন্দু জনগোষ্ঠীর সকল মানুষের জীবনে এক আলোকদীপ্ত বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। সুদীর্ঘকাল ধরেই বাংলাদেশসহ বাংলাভাষী মানুষদের এই ধর্মীয় উৎসবটি এক ঐশ^র্যময় ঐহিহ্যে মহিমামন্ডিত। দেবী দুর্গা শক্তি ও সাহসের মূর্ত প্রতীক। পৃথিবীতে অঞ্চলভেদে যেকোন উৎসবই মানুষের মধ্যে নিয়ে আসে স্বর্গীয় আনন্দ ও শুভেচ্ছার বার্তা। উৎসবের প্রাঙ্গণে কোন বিধি-নিষেধ নেই। সেটি প্রত্যেক মানুষেরই মিলন ক্ষেত্র। বাংলাদেশের মৃত্তিকার গভীর থেকে যে ইতিহাস ও ঐতিহ্য উৎসারিত হয়, সেটি ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মূল্যবোধকে অন্তর্ভূক্ত করে। দুর্গাপূজার মূল বাণী হচ্ছে- অশুভের ওপর শুভের জয়। দুর্গা, তার গৌরবময় লক্ষ্য অর্জনের জন্য মন্দকে উপলব্ধি করেন এবং তা প্রতিহত করেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী পতিত সরকারের আমলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য বারবার সাম্প্রদায়িক উস্কানি, বিভিন্ন ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর দেবালয় আক্রমণ ও ভাংচুরসহ নানা অপ্রীতিকর সাজানো ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। পতনের পরেও তাদের ঘাপটি মেরে থাকা অনুচরেরা এখনও তৎপর। তবে অশুভ চক্রের চক্রান্ত ঠেকাতে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে পুজামণ্ডপে পাহারা দিচ্ছে। যাতে শান্তি ও সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হতে পারে। তাদের প্রতিহত করতে বিএনপি অঙ্গীকারাবদ্ধ।
মির্জা ফখরুল বলেন, মধ্যযুগীয় কাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দুর্গাপূজা একটি সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হিসেবে পালিত হয়ে আসছে, একই সঙ্গে ধর্মীয় উপাসনার মূল বজায় রেখেছে। ধর্মীয় উৎসব সাম্প্রদায়িক কোন বৃত্তে আবদ্ধ থাকে না, উৎসব বৃত্ত অতিক্রম করে সকল মানুষকে নিয়ে উদযাপিত হয়। মানুষের আত্মাকে মিলনের বোধে উদ্দীপ্ত করে। আমি এবারের শারদীয় দুর্গাপূজায় সম্প্রীতি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিকের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। অপশক্তির অশুভ তৎপরতা দুর্গাপূজার উৎসবকে যাতে কোনভাবেই বিঘ্ন ঘটাতে না পারে, সেজন্য সকলকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন
- সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ বিএনপির সদস্য হতে পারে না : রিজভি
- মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সজাগ ও সতর্ক থাকার নির্দেশ তারেক রহমানের
- আজ পাঁচ বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তারেক রহমান
- আজ পাঁচ বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তারেক রহমান
- দৌলতপুরে ধানের শীষের পক্ষে সজীবের ভ্যান শোভাযাত্রা
- ওমরাহ পালনে সপরিবারে সৌদি যাচ্ছেন তারেক রহমান
- নভেম্বরের মধ্যেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান : সালাহউদ্দিন আহমেদ
- সেন্টমার্টিনে অসহায় জেলে পরিবারের পাশে তারেক রহমান